Comments

শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭

মাদারবোর্ড কেনার আগে যেসব বিষয় সম্পর্কে অবশ্যই আপনার জানতে হবে

কম্পিউটার কিনতে হলে আপনাকে প্রসেসরের পরে বিবেচনা করতে হবে কি মাদারবোর্ড কিনবেন। নিম্নলিখিত বিষয়গুলো আপনাকেজানা থাকলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন কোন মাদারবোর্ড আপনার দরকার। তো চলুন জেনে নেই:

১. সবসময় সর্বশেষ যে মাদারবোর্ডটি বাজারে এসেছে সেটি সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন।
২. সর্বশেষ মাদারবোর্ড সংগ্রহ করলেই হবে না আপনাকে দেখতে হবে আপনার এই মাদারবোর্ডটি কোন কোন স্পিডের প্রসেসরকে সাপোর্ট করে। নতুনদের ক্ষেত্রে চেষ্টা থাকা উচি ৎ বাজারের সর্বশেষ মডেলের প্রসেসর কেনা। সেক্ষেত্রে আপনার মাদারবোর্ড উক্ত প্রসেসরকে সাপোর্ট করে কিনা সেটি জেনে নিন। সেটি না হলে উপযুক্ত মাদারবোর্ড বেছে নিন। যারা ইতিমধ্যে কমপিউটার ব্যবহার করছেন এবং কোন কারনে বর্তমানমাদারবোর্ডটি নষ্ট হয়ে গেছে তারা তাদের প্রসেসরের সাথে মিল রেখে নতুন মাদারবোর্ড সংগ্রহ করবেন।
৩. প্রসেসর ও মাদারবোর্ডের বাস স্পিড কত এবং এগুলোর মধ্যে সাম Ä স্য আছে কিনা তা দেখে নিবেন।
৪. মাদারবোর্ডের বাস স্পিড কত তা জেনে নিন। স্পিড বেশি হলে কাজের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করবেন।
৫. অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেনমাদারবোর্ডের বাস স্পিড সঙ্গে ক্যাশ মেমোরির স্পিডও যেন সাম Ä স্যপূর্ণ হয়।
৬. ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে উক্ত মাদারবোর্ডটি সর্ব্বোচ্চ কত ক্ষমতা পরযন্ত র‌্যামকে সাপোর্ট করে সেটি দেখে নিন। যত বেশি র‌্যাম ব্যবহার করবেন আপনার পিসি তত বেশি দ্রুত কাজ করবে। এখন ব্যবহার না করলেও যেন পরবর্তিতে আপনি বাড়তি র‌্যাম লাগিয়ে নিতে পারেন সেটি বিবেচনায় রাখুন।
৭. মাদারবোর্ডে হার্ডডিস্কলাগানোর জন্য কয়টি পোর্ট আছেতা দেখে নিন। বেশি পোর্ট থাকলে সেটি অবশ্যই আপনার জন্য ভাল।
৮. মাদারবোর্ডে কতগুলো ইউএসবি পোর্ট আছে তা দেখে নিন। যত বেশি পোর্ট পাবেন তত বেশি ইউএসবি ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
৯. মাদারবোর্ডে কি কি ধরনেরস্লট আছে এবং কয়টি করে আছে তাদেখে নিন। এ ক্ষেত্রে PCI এবং ISA স্লটগুলোর বিষয়ে খেয়াল রাখবেন।
১০. স্বীকৃত কোন প্রতিষ্ঠানকর্তৃক উক্ত মাদারবোর্ডটি ছাড়পত্র পেয়েছে কিনা তা দেখেনিন। যেমন: FCC কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র।
১১. বাজারে বেড়িয়েছে USB 3 ভার্সনের মাদারবোর্ড। যা অত্যন্ত স্পিডে (৫ গিগা/সে:) ইউএসবির মাধ্যমে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে।
Share:

শনিবার, ১৩ মে, ২০১৭

মুসলিম আইনে তালাকের অধিকার

তালাকের অধিকার

তালাকের অধিকার কনটেন্টটিতে স্বামী-স্ত্রী কীভাবে তালাক দিতে পারেন, স্বামীর পক্ষ থেকে তালাক, স্ত্রীর পক্ষ থেকে তালাক, হিল্লা বিয়ে, চেয়ারম্যানের দায়িত্ব, কাজীর দায়িত্ব মুসলিম পারিবারিক আইনে তালাক সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে ।

মুসলিম আইনে তালাকের অধিকার




সাইদ ও লোপার বিয়ের দুই বছর পর সাইদ লোপাকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। লোপা তার বাবার বাড়িতে ফিরে আসে। বিয়ের পর থেকেই সাইদ ও তার বাবা-মা লোপাকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। কারণ বিয়ের সময় লোপার বাবা যে যৌতুক দিতে চেয়েছিল টাকার অভাবে তার সব দিতে পারে নাই। বিয়ের সময় লোপার বাবা সাইদকে বলেছিল যে, আমন মৌসুমের পর সাইদকে তাদের দাবী মত টাকা ও মটর সাইকেল কিনে দিবে। কিন্তু গত দুই বছর আমনের ফলন কম হওয়ায় লোপার বাবা সাইদকে শুধু টাকা দিতে পারেন। মটর সাইকেল কিনে দেয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। লোপার বাবার বাড়িতে ফিরে আসায় তার বাবা-মা চিন্তায় পড়েন। এর কয়েক দিন পরেই সাইদ লোপাকে তালাকের নোটিশ পাঠায়। লোপা কি করবে বুঝতে পারে না। প্রচন্ড অসহায়বোধ করে। বিয়ের আগে সে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করেছিল, তাই আইন সম্পর্কে তার কিছু ধারণা আছে। একদিন সে তার বাবার সাথে উকিলের কাছে যায় পরামর্শের জন্য। উকিল তাকে তালাকের অধিকার সম্পর্কে তথ্য জানান।
উকিল : মুসলিম আইন অনুযায়ী বিয়ে একটি চুক্তি। এই চুক্তি যে কোন পক্ষ রদ বা ভঙ্গ করতে পারেন। বিয়ের মাধ্যমে স্থাপিত সম্পর্ককে আইনগত উপায়ে ভেঙ্গে দেয়াকে তালাক বা বিয়ে বিচ্ছেদ বলে। স্বামী বা স্ত্রীর যে কোন একজনের ইচ্ছাতেও (শর্তাধীন) বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটতে পারে। কিন্তু তোমার স্বামী তোমাকে যৌতুকের জন্য তালাক দিয়েছে যা অন্যায়।
লোপা : তালাকের ক্ষেত্রে স্বামী/স্ত্রীর অধিকার কি সমান ?
উকিল : বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটাতে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার সমান নয়। এক্ষেত্রে স্বামীর ক্ষমতা বা  অধিকারই বেশি।
লোপা : স্বামী বা স্ত্রী কিভাবে তালাক দিতে পারে ?
উকিল : স্বামী-স্ত্রী নিম্নলিখিত উপায়ে তালাক দিতে পারেন:
  • স্বামী কর্তৃক তালাক (স্বামী আইনের নিয়ম মেনে যে কোন সময় স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন।)
  • স্ত্রী কর্তৃক তালাক (স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়ে থাকেন অর্থাৎ তালাক-ই-তৌফিজের মাধ্যমে স্ত্রী কর্তৃক তালাক)
  • পারষ্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে তালাক (খুলা বা মুবারত পদ্ধতিতে তালাক)
  • আদালতের মাধ্যমে তালাক।
লোপা : স্বামী কিভাবে স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন ?
উকিল : একজন মুসলিম পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মস্তিস্কের পুরুষ যে কোন সময় স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন। কিন্তু সে মুখে বা লিখে যেভাবে তালাক দিক না কেন তালাক সাথে সাথে কার্যকর হবে না। ব্যাখ্যা: ১ 
লোপা : স্ত্রী কি স্বামীকে তালাক দিতে পারে ?
উকিল : একজন স্ত্র্রী যখন ইচ্ছা তখন স্বামীকে তালাক দিতে পারেন না। মুসলিম আইনে স্বামীকে তালাক দেয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রী সীমিত অধিকার ভোগ করেন। নিম্নলিখিত যে কোন উপায়ে একজন স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারেন:

  •  
ক. স্ত্রী আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে
খ. তালাক-ই-তৌফিজ-এর মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে
গ. খুলা’র মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে, এছাড়া
ঘ. স্বামী-স্ত্রী দুজনই মুবারতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে। ব্যাখ্যা: ২
লোপা : হিল্লা বিয়ে কি ?
উকিল : প্রাচীন সমাজে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাক হয়ে গেলে তারা আবার বিয়ে করতে চাইলে মধ্যবর্তীসময়ে স্ত্রীকে আরেকটি বিয়ে করতে হত। এই দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাক্তি (স্বামী) স্ত্রীকে তালাক দিলে বা মারা গেলে স্ত্রী পুনরায় প্রথম স্বামীকে বিয়ে করতে পারত। এই মধ্যবর্তীকালীন বিয়েকে ‘হিল্লা’ বিয়ে বলে। তবে বর্তমানে হিল্লা বিয়েকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ব্যাখ্যা: ৩ 
লোপা : বিয়ে-বিচ্ছেদ বা তালাকের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের কি কোন দায়িত্ব আছে ?
উকিল : বিয়ে-বিচ্ছেদ বা তালাকের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান উভয় পক্ষকে ডেকে সালিশের ব্যবস্থা করতে পারেন। ব্যাখ্যা: ৪
লোপা : এক্ষেত্রে কাজী কি দায়িত্ব পালন করতে পারেন ?
উকিল : কাজীর দায়িত্বগুলো হলো :
  • জন্ম ও বিবাহের মতো তালাকও রেজিষ্ট্রি করতে হয়।
  • নিকাহ নিবন্ধক কাজী তার এখতিয়ারভূক্ত এলাকার মধ্যে আবেদনপত্রের ভিত্তিতে তালাক রেজিষ্ট্রি করবেন।
  • তালাক রেজিস্ট্রির জন্য নিকাহ নিবন্ধক ২০০ টাকা ফি নিবেন (এই ফি সময়ে সময়ে সরকারী প্রজ্ঞাপন দ্বারা পরিবর্তন করা হয়)।
  • যে ব্যক্তি তালাক কার্যকর করেছে সে রেজিস্ট্রির জন্য আবেদন করবে এবং ফি দেবে।
  • উক্ত দুই পক্ষের মধ্যে সত্যি তালাক কার্যকর হয়েছিল কিনা তা নিকাহ নিবন্ধক পরীক্ষা করে দেখবেন।
লোপা : মুসলিম পারিবারিক আইনে তালাক সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ?
উকিল : মুসলিম আইনে বিয়ে একটি চুক্তি, তাই এ চুক্তি নানা কারণে সমাপ্ত বা ভংগ করা যায়। মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের চুক্তি ভেঙ্গে বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটানো সম্ভব। ব্যাখ্যা: ৫
উকিল : তোমার বিয়ে কি রেজিস্ট্রি করা হয়েছিল ?
লোপা : হ্যাঁ।
উকিল : তাহলে তুমি বুদ্ধিমানের কাজ করেছ। তালাক হলে তুমি তোমার দেনমোহর পাওয়ার আবেদন করতে পারবে।
সাইদ তালাক বহাল রাখার কারণে লোপা ও সাইদের বিয়েটা টেকে না। তবে তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রিশন হওয়ার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের পর লোপা সাইদের কাছ থেকে দেনমোহর ও ভরণপোষণ পান।
সচরাচর জিজ্ঞাসা 
প্রশ্ন ১. মুখে মুখে তালাক দিলে তালাক কার্যকর হবে কি ?
উত্তর. না, ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্টেশন আইন অনুযায়ী কাজীর মাধ্যমে তালাক দিতে হবে এবং তালাকের নোটিশ স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে অথবা স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনকে পাঠাতে হবে।
প্রশ্ন ২. স্বামী কতৃর্ক স্ত্রীকে নোটিশ প্রদান ছাড়া তালাক দিলে তালাক কি কার্যকর হবে ?
উত্তর. হ্যাঁ, তালাক কার্যকর হবে, তবে নোটিশ প্রদান না করায় স্বামীর ১ বছরের কারাদন্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়দন্ড হবে।
প্রশ্ন ৩.স্বামী কি স্ত্রীকে কোন কারণ ছাড়াই তালাক দিতে পারেন ?
উত্তর. হ্যাঁ, স্বামী-স্ত্রীকে কোন প্রকার কারণ ছাড়াই তালাক দিতে পারেন।
৪. স্ত্রী কি স্বামীকে কোন কারণ ছাড়া তালাক দিতে পারেন ?
উত্তর. না, আইনে উল্লেখিত কারণ ছাড়া স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারেন না।
৫. গর্ভাবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলে তালাক কি কার্যকর হয় ?
উত্তর. না, গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে তালাক কার্যকর হয় না। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ প্রদান করে ৯০দিন পর তালাক কার্যকর করতে হয়।
৬. বিচ্ছেদপ্রাপ্ত/ তালাকপ্রাপ্ত স্বামী- স্ত্রী কি পুনরায় ঘর সংসার করতে পারেন? 
উত্তর. ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৭ (৬) ধারা অনুসারে তালাকের মাধ্যমে কোন বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে, বিচ্ছেদপ্রাপ্ত/ তালাকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রী পুনরায় একত্রে ঘর- সংসার করতে চাইলে নতুন করে নিয়ম অনুসারে বিয়ে করতে হবে; তবে পুনর্বিবাহ করে ঘর-সংসার করায় আইনতঃ কোন বাধা নেই।
 তথ্যসূত্র 
  1. মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১।
  2. মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্টেশন আইন, ১৯৭৪।
  3. মুসলিম পারিবারিক আইন, পৃষ্ঠা নং ৩2, পারিবারিক আইনে বাংলাদেশের নারী, প্রথম প্রকাশ: জুন-১৯৯৭, আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
  4. এ্যাডভোকেট, আলী, সালমা, বিয়ে, বিচ্ছেদ ও স্ত্রীর তালাকের অধিকার, পৃষ্ঠা নং ১, নারী ও আইন, চতুর্থ সংস্করণ: ডিসেম্বর ১৯৯৩, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।
  5. চৌধুরী, শামিমা, নিবন্ধ-তালাক: নারী বিরোধী লোকাচার, উন্নয়ন পদক্ষেপ, দ্বাদশ বর্ষ, নবম সংখ্যা, সেপ্টেম্বর ২০০৬।

মুসলিম আইনে তালাকের অধিকার : ব্যাখ্যা
ব্যাখা: ১ 
◊    ১৯৬১ সালের পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৭(১) ধারা অনুযায়ী যে ব্যক্তি তালাক দিবেন তিনি লিখিত ভাবে তালাকের নোটিশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার চেয়ারম্যান/সিটি কর্পোরেশন বরাবরে ও স্ত্রীর কাছে একটি নোটিশ পাঠাবেন।
  • নোটিশ না পাঠালে ১ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ড হবে।
  • নোটিশ পাবার ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান/মেয়র শালিসী পরিষদ গঠন করবেন এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমঝোতা আনার চেষ্টা করবেন।
  • শালিসী পরিষদ উভয়কে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতি ৩০ দিনে ১টি নোটিশ করে মোট ৩টি নোটিশ প্রদান করবেন। এর মধ্যে স্বামী নোটিশ প্রত্যাহার না করলে তালাক কার্যকর হবে। স্বামীকতৃর্ক নোটিশ প্রত্যাহার করলে তালাক কার্যকর হবে না।
  • তালাক প্রদানের সময় স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে তালাক কার্যকর হবে না। তবে সন্তান প্রসব হওয়ার পর পর্যন্ত নোটিশ বহাল রাখলে ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। কিন্তু এর মধ্যে স্বামী নোটিশ প্রত্যাহার করলে তালাক কার্যকর হবে না।
  • ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে অধ্যাদেশের কোথাও নোটিশ প্রধান না করলে তালাক হবে না একথা উল্লেখ নাই। তবে স্বামী শাস্তি পাবেন।
  • তালাকের ক্ষেত্রে স্বামী যখন ইচ্ছা তখন একতরফাভাবে তালাক দিতে পারেন। তাকে তালাকের কারণ দেখাতে হয়না। কেন স্বামী স্ত্রীকে তালাক দিলেন তা স্ত্রী জানতে চাইতে পারেন না। এটি স্বামীর একতরফা ক্ষমতা।
ব্যাখা: ২
ক. আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ 
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচেছদ আইন অনুযায়ী একজন স্ত্রী কি কি কারণে স্বামীর বিরুদ্ধে  আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন তা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ আছেঃ
  1. চার বৎসর যাবৎ স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে বা কোন খোঁজ খবর না রাখলে।
  2. দুই বৎসর ধরে স্ত্রীর খোরপোষ প্রদানে স্বামী অবহেলা করলে বা ব্যর্থ হলে।      
  3. স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করলে।
  4. স্বামী ৭ বছর বা তার চেয়ে বেশী সময়ের জন্য কারাদন্ডে দন্ডিত হলে।
  5. স্বামী কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর ধরে তার দাম্পত্য দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হলে।
  6. বিয়ের সময় স্বামী পুরুষত্বহীন থাকলে এবং তা মামলা দায়ের করার সময় পর্যন্ত বজায় থাকলে।
  7. স্বামী দুই বৎসর ধরে অপ্রকৃতিস্থ থাকলে অথবা কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্থ বা মারাত্মক যৌনরোগে আক্রান্ত থাকলে।
  8. আঠারো বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগে অর্থাৎ নাবালিকা অবস্থায় স্ত্রীর বিয়ে হয়ে থাকলে এবং উনিশ বৎসর হওয়ার আগেই স্ত্রী বিয়ে অস্বীকার করলে। তবে এক্ষেত্রে স্বামীর সাথে দাম্পত্য মিলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলে এরকম মামলা দায়ের করা যাবে না।
  9. নিম্নলিখিত যে কোন অর্থে স্বামী স্ত্রীর সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করলে-                                             
  ক. স্বামী যদি স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে থাকেন;    
  খ. স্বামী খারাপ চরিত্রের মেয়েদের সাথে মেলামেশা করলে কিংবা নৈতিকতা বর্জিত জীবন যাপন করলে;
  গ. স্ত্রীকে জোর পূর্বক নৈতিকতাবিহীন জীবন-যাপনের জন্য বাধ্য করার চেষ্টা করলে;          
  ঘ. স্ত্রীর অমতে তার সম্পত্তি হস্তান্তর করলে কিংবা স্ত্রীকে তার সম্পত্তির ওপর বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা দিলে; 
  ঙ. স্ত্রীকে তার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বাধা প্রদান করলে।  
 চ. যদি স্বামীর একাধিক স্ত্রী থেকে থাকে এবং পবিত্র কুরআনের নির্দেশ অনুসারে স্বামী তাদের সাথে সমান ব্যবহার   না করলে।
১০. মুসলিম আইনে স্বীকৃত অন্য যে কোন যুক্তিসংগত কারণের উপরও স্ত্রী আদালতে তালাকের অনুমতির জন্য মামলা করতে পারেন।

আদালত বিয়ে বিচ্ছেদের ডিক্রি দিলে ডিক্রির একটা সত্যায়িত কপি আদালতের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাতে হবে। চেয়ারম্যান নোটিশটিকে তালাকের নোটিশ হিসেবে গণ্য করে উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করবেন। চেয়ারম্যান যেদিন নোটিশ পাবেন তার ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে।

খ. তালাক-ই-তৌফিজ-
‘কাবিন নামা’র ১৮ নং কলামে স্বামী কতৃর্ক স্ত্রীকে বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষমতা দেয়াকে ‘তালাক-ই-তৌফিজ’ বলে। এই ‘তালাক-ই-তৌফিজের’ ক্ষমতা দেয়া থাকলে স্ত্রী আদালতের আশ্রয় ছাড়াই স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। এক্ষেত্রে স্বামীর মতোই স্ত্রী তালাকের নোটিশ চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবেন ও এক কপি স্বামীর কাছে পাঠাবেন। নোটিশ প্রাপ্তির ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে।
গ. খুলা- 
খুলা তালাক হলো স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর দাম্পত্য অধিকার থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রস্তাব। এক্ষেত্রে স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে স্বামীকে বিচ্ছেদের বিষয়ে রাজী করানোর চেষ্টা করবেন। স্বামী রাজী থাকলে এভাবে বিচ্ছেদ ঘটতে পারে। বিচ্ছেদের উদ্যোগ অবশ্যই স্ত্রীর কাছ থেকে হতে হবে।
ঘ. মুবারত- 
স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে-বিচ্ছেদ সম্পন্ন হলে তাকে মুবারত বলে। যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদের ইচ্ছাদি পারস্পারিক হয় তখন একপক্ষ প্রস্তাব করে এবং চুক্তির মাধ্যমে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। যিনি বিয়ে বিচ্ছেদের প্রস্তাব দিবেন তিনিই নোটিশ পাঠাবেন।
ব্যাখা: ৩
◊      ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশে হিল্লা বিয়েকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
  • ১৯৬১ সালের আইনে তালাকের পর স্বামী-স্ত্রী পুনরায় বিয়ে করতে চাইলে হিল্লা বিয়ের দরকার হয় না।
  • তবে পর পর ৩ বার তালাক হলে তৃতীয় বারের পর স্বামী ১ম স্ত্রীকে পুনরায় বিয়ে করতে চাইলে স্ত্রীকে আরেকটি বিয়ে দিয়ে তারপর সেই বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে প্রথম স্বামী স্ত্রীকে আবার বিয়ে করতে পারবেন।
ব্যাখা: ৪
বিয়ে-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব হলো ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুসারে যে নোটিশ তাকে দেয়া হয় তা পাবার ৩০ দিনের মধ্যে উভয় পক্ষকে ডেকে সলিশের ব্যবস্থা  করা । সালিশে পুনর্মিলনের একটি সম্ভাবনা থাকে বলে এখানে চেয়ারম্যান ও সালিশী পরিষদের ভূমিকা অপরিসীম।
ব্যাখা: ৫
◊         তালাকের ক্ষেত্রে স্বামীর অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা নিয়ন্ত্রন ও স্ত্রী কর্তৃক শর্ত সাপেক্ষে তালাকের অধিকার প্রদানসহ মুসলিম পরিবারের পারিবারিক সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৩৯ সালে মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন এবং ১৯৬১ সালে মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ আইন জারি করা হয়।
  •  বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর অধিকার ও মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে এই আইনকে পরিমার্জন ও গ্রহণযোগ্য করা হয়।
  •  ১৯৭৪ সালে মুসলিম বিবাহ তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন প্রণীত হয়। মুসলিম স্বামী-স্ত্রীর বৈধ স্বত্ত্ব-স্বার্থ নির্ধারণ করে স্ব স্ব স্বার্থ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন একত্রীকরণ ও সংশোধন করে এটি প্রণয়ণ করা হয়।
  •  এরপর বিবাহ-তালাক বিধিমালা রেজিস্ট্রেশন ১৯৭৫ সালে জারি করা হয়।
  • বিবাহ- বিচ্ছেদ, দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধার, দেনমোহর, ভরণপোষণ, অভিভাবকত্ব ইত্যাদি পারিবারিক বিষয়াদির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫ প্রণীত হয়।
Share:

Categories

Sample Text

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation test link ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat.

Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate another link velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur.

Definition List

Definition list
Consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua.
Lorem ipsum dolor sit amet
Consectetur adipisicing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua.